Wednesday, July 28, 2010

রাজনীতি করতে হলে 'রাজনৈতিক ভুলে'র জন্য ক্ষমা চাইতে বাধা কোথায়?

দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলতে গেলে দু'হাজার সাত সালের এক-এগার থেকে শুরু করলে সুবিধা হয়। সাবেক সেনাপ্রধান মঈন ইউ আহমেদকে নিয়ে প্রাক্তন বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর ফখরুদ্দিন আহমদের তত্ত্বাবধায়ক সরকার দেশের রাজনীতিতে একধরনের চাপিয়ে দেয়া সংস্কারের চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়ার পর বর্তমানে আবার পুরনো গণতান্ত্রিক ধারায় আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রক্ষমতায় আরোহন করে। সময়ের পরিবর্তনে অনেক জল গড়িয়েছে অনেক ধুলো জমেছে ইতিহাসের পটভূমিতে। সম্প্রতি বর্ষীয়ান রাজনীতিক সাইফুর রহমান ও মান্নান ভূঁইয়ার মৃত্যুসহ গত দশকে আমরা হারিয়েছি বড় অনেক রাজনীতিককে।

বর্তমান সরকারের সাথে জামায়াতসহ বিরোধী দলগুলোর যে রাজনৈতিক টানাপোড়েন চলছে তার উৎপত্তি সুদূরে প্রোথিত হলেও প্রকট হয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রাজনৈতিক সংস্কারের উদ্যোগ থেকে। প্রথমে দুই প্রধান দলের দু'জন নেত্রীকে বাদ দিয়ে রাজনৈতিক সংস্কারের চেষ্টা করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যর্থ হয়। তারা দ্রব্যমূল্যের উধর্বগতি নিয়ন্ত্রণেও ব্যর্থ হয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর দুর্নীতির খোঁজখবর করতে করতে মিলিটারি অফিসাররা ভেতরে ভেতরে নিজেরা অনেক বড় বড় আর্থিক দুর্নীতি করেছেন বলে পরবর্তীকালে পত্রিকাগুলোয় প্রকাশিত হয়েছে এবং হচ্ছে। এতে আবারও প্রমান হল বাংলাদেশের ক্ষমতাধররা ক্ষমতার অপব্যবহার করতে বেশ পাকা। তাছাড়া বিদ্যমান বিদগ্ধ রাজনৈতিক দলগুলোর ব্যর্থতায় বাংলাদেশে গণতন্ত্রও ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে, যার সূত্র ধরেই রাজনীতিতে সামরিক-তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হস্তক্ষেপ হয়েছে। এ সময়টিতে বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র বলায় কোন ত্রুটি নেই।
শেষপর্যন্ত আমরা একটি চলনসই ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সরকার পেলেও বর্তমান সরকার গণতান্ত্রিক আচরণের ক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে আছে। সামরিক-তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় রাজনীতিতে কিছুটা ধাক্কা লেগেছিল । সে ধাক্কা সামাল দিতে গিয়ে যে পরিবর্তনটা আমাদের চোখে পড়েছে তাতে আমরা ভেবেছিলাম অচিরেই দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন হবে। কিন্তু তা এখন আর দেখা যাচ্ছে না। দেশে এখন বাম দল বলে কোন রাজনৈতিক ধারা নেই যেহেতু জাঁদরেল বামরা নৌকা মার্কা নিয়ে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করছেন। ডানের কথা বললে বলা যায় তাদেরও অতীত বিতর্কে জড়িত থাকার কারণে দেশের সচেতন মহলে স্বীকৃতি নিয়ে টানাপোড়েন আছে।

জামায়াত ইসলামীর কথায় আসি। আসলে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করার পক্ষে আমি যেতে চাই না। তার প্রথম কারণ ভারতসহ পৃথিবীর বিভিন্ন গণতান্ত্রিক দেশে তা নিষিদ্ধ করা হয় নি। বিশেষ করে গণতন্ত্রের মূলমন্ত্র সকল ধর্ম, বর্ণ, জাতির মত প্রকাশের অধিকারের কারণে তা নিষিদ্ধ করা যায় না। দেশের মুক্তিযুদ্ধে জামায়াতের সাবেক ও বর্তমান নেতৃত্বের বিতর্কিত অবদানের জন্য- জামায়াতের ব্যাপারে দেশের সাধারণ জনগণের সন্দেহ রয়েছে। এটা স্বাভাবিক। অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর এমনটাই মনোভাব।

বাংলাদেশ প্রধানত বাঙালি-মুসলমান অধ্যুষিত দেশ হিসেবে এখানে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি কেহই ইসলাম ধর্ম রক্ষার কথা কম বলে না। জামায়াতের সমস্যা হল তাদের গায়ে মুক্তিযুদ্ধে রাজাকারী তথা পাকিস্তানের পক্ষাবলম্বনের যে কালিমা লেগেছে তা থেকে তারা বের হয়ে আসেনি। পক্ষাবলম্বনটা নিরপরাধ ছিল না। যদি মনে করি মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধে অভিযুক্ত অধ্যাপক গোলাম আজম, মতিউর রহমান নিজামী, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদি, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, কামারম্নজ্জামান ও কাদের মোল্লা প্রমুখ নেতারা বাংলাদেশে ইসলাম রক্ষার রাজনীতি করছেন তাহলে ইসলাম ধর্মের প্রতি এবং জামায়াত ইসলামীর প্রতি তাদের দায়িত্ব অনেক। এমনকি মানুষের জীবনের চেয়ে ধর্ম বা আদর্শ রক্ষা করা বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলেই জানি।

ইদানিং সমাজে শিক্ষিত জনগোষ্ঠী এবং নতুন প্রজন্ম ইন্টারনেটে বিদেশী পত্রপত্রিকার আর্কাইভ থেকে তৎকালীন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক খবরাখবর পেয়ে যাচ্ছে অনায়াসে। সমসাময়িক বিভিন্ন পত্রপত্রিকা বা টিভি চ্যানেল মারফত আমরা দেখেছি জামায়াতের শীর্ষ নেতৃত্ব একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে তাদের সিদ্ধান্ত 'রাজনৈতিক ভুল' ছিল স্বীকার করে বক্তব্যও দিয়েছেন। কিন্তু তারা সে ভুলের জন্য ক্ষমা চাওয়ার কথা কখনও নিজেরাও বলেননি এবং সাংবাদিকরা ক্ষমা চাওয়ার প্রসঙ্গ তুললে তারা কৌশলে সে প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে গেছেন। কিছুদিন আগে জামায়াত নেতাদের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদকালে এমন প্রশ্নের উত্তরে নাকি তারা বলেছেন 'ক্ষমা চাইলে তাদের রাজনীতিক আদর্শ থেকে সরে যেতে হবে'। রিমান্ডের কথা পত্রিকায় কোন্ সূত্রে এসেছে বা তার সত্যতা সম্পর্কে না জেনেই বলা যায়- তারা যদি এমন কথা বলে থাকেন, তাহলে কিসের ভিত্তিতে ক্ষমা চাইলে রাজনৈতিক আদর্শ থেকে সরে যেতে হবে বলেছেন তা বোধগম্য নয়। কারণ ইসলামে ক্ষমা চাইতে বা ক্ষমা করতে কোন নিষেধ আছে বলে তো শুনিনি। আর তাদের রাজনীতির মূল আদর্শ তো ইসলাম। তাহলে ক্ষমা চাইলে আদর্শ বিচ্যুত হবে কি করে?

যা হোক প্রশ্ন যতই আসুক বা উত্তর যা-ই পাওয়া যাক জামায়াত ইসলামীর নেতারা তাদের কৃত 'ভুলে' জন্য ক্ষমা চাইতে এখনও প্রস্তুত নন বা এমন সিদ্ধান্তও নেননি এটাই বর্তমান অবস্থা।

জামায়াত ইসলামীর জুতোয় পা দিয়ে যদি পরিস্থিতি পর্যালোচনা করি তাহলে দেখব, এমন অনেকে আছেন জামায়াত করেন বা সমর্থন করেন বা ভোট দেন, কিন্তু তাদের একাত্তরের রাজনীতিতে বিশ্বাস করেন না। তাদের পক্ষ থেকে দেখলে জামায়াত ইসলামী বাংলাদেশের আর দশটা রাজনৈতিক দলের মতই একটা রাজনৈতিক দল।

জামায়াত একটা রাজনৈতিক দল যেখানে ১৮ থেকে ৪০ বছরের যেসব কর্মী, সমর্থক ইত্যাদি আছেন তারাও ইসলামকে প্রতিষ্ঠা করতে চায়। যারা এ দলের পথিকৃত, চল্লিশ বছর আগে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে যারা বিরোধীতা করেছেন ও পাকিস্তানি আর্মির গণহত্যা, ধর্ষণসহ নানা দুষ্কর্মে সমর্থন ও প্রত্যক্ষ মদদ দেয়ার অভিযোগে দেশের রাজনীতিতে যাদের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে, তারাও ইসলাম প্রতিষ্ঠা করার রাজনীতি করছেন বলে তাদের মত। জামায়াতের রাজনীতিতে দায়টা তাহলে কোন অংশের বেশি? নেতৃস্থানীয়দের দায় বেশি এটা স্পষ্ট। নতুন প্রজন্ম আইডেন্টিটি সঙ্কটে ভোগে। তারা নিজেদের 'রাজাকার' পরিচয় নিয়ে সন্তুষ্ট নয়। আবার পুরাতন, ঘুণেধরা প্রজন্ম তাদের বিতর্কিত আইডেন্টিটি রিপেয়ার করারও কোন চেষ্টা নেয়নি কখনও। গণতন্ত্রের অংশ হয়ে দেশের মূলধারায় নতুন প্রজন্মের জামাত-শিবিরের সদস্যরা হয়ত তাদের মেধা ও শক্তিকে দেশের জন্য কাজে লাগাতে চায়। কিন্তু সমাজের সর্বসাধারণ্যে দলের বদনাম থাকার কারণে তাদের পক্ষে নিরাপত্তা বোধ করা সম্ভব হচ্ছে না।

জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের কেউ কেউ হয়তো এখনো নিরবে পাকিস্তানের জন্য কাঁদেন। আবারও ইউনাইটেড পাকিস্তানের স্বপ্নও দেখতে পারেন। কিন্তু বাস্তবতা হল ইউনাইটেড পাকিস্তানের ধারণাটাই ছিল ভুল। কারণ পূর্ব ও পশ্চিমের মানুষের ধর্ম ছাড়া আর কোন বিষয়ে কোন মিল নেই। চিন্তা-দর্শন বলুন, খাবার-খাদ্য বলুন, মেজাজ-মর্জি বলুন, ভাষা বলুন বা সংস্কৃতি বলুন। কোন কিছুতেই মিল নেই আমাদের সাথে পাকিস্তানীদের। তাহলে ইউনাইটেড পাকিস্তানের ধারণা ভুল বলতে কোন আপত্তি নেই। কিন্তু বাংলাদেশ জামায়াতে এমন অনেককেই পাওয়া যাবে যারা সে স্বপ্ন ভুলতে পারেন না। এটা অন্যায়। কারণ মুক্তিযুদ্ধের সময় তাদের সেনাবাহিনী যে বর্বরতা দেখিয়েছে, তাতে তাদের যে হিংস্রতার পরিচয় পাওয়া গেছে, তারপরও কোন বাংলা মায়ের সন্তান পাকিস্তানের জন্য কাঁদতে পারে না।

বাঙালিরা খুবই ধার্মিক। তা সে হিন্দু, বৌদ্ধ, খৃস্টান বা মুসলমান যেই হোক। কাজেই সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের দেশে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের মতো দলের উপস্থিতি অবাস্তব নয়। অবাস্তব হল জামাত নেতাদের পাকিস্তানপ্রীতি।

এবার জামায়াত নেতাদের ইসলামপ্রীতির কথা বলি । তারা যদি ইসলামকে ভালবাসেন এ দাবি করেন তাহলে তারা নিজেদের 'ভুল' স্বীকার করে প্রকাশ্য জনসমক্ষে- তথা রেডিও-টিভি, পত্রপত্রিকা ও জনসভায় সাধারণ মানুষের কাছে সে 'ভুলে'র জন্য ক্ষমা চাইলেন না কেন? কেন তারা ক্ষমা চেয়ে পুনরায় ইসলামকে বাংলাদেশে রক্ষার জন্য রাজনীতি শুরু করলেন না? কেন তারা প্রেসিডেন্ট জিয়ার আমলে সামরিকতন্ত্রের লেজ ধরে বাংলাদেশে রাজনীতি করতে আসলেন। তাদের অন্তর যদি পরিস্কার হত তাহলে তারা এভাবে ঝোপ বুঝে কোপ মেরে বাংলাদেশে রাজনীতি করতে আসতেন না। অধ্যাপক গোলাম আজম স্বাধীনতার পরপরই দেশে এসে তার দলের লোকদের নিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়ে রাজনীতি শুরু করতে পারতেন। তা থেকে বোঝা যায় তাদের অন্তরে কালি ছিল।

তদুপরি বর্তমান পরিস্থিতিতে নতুন বাংলাদেশী প্রজন্মের শিক্ষাদীক্ষায় যোগ্য অনেক নবীন নেতা যখন জামায়াতকে পরিচালনা করার যোগ্যতা রাখেন তখনও নিজেদের কলঙ্ক নিয়ে তারা কেন শীর্ষ পদগুলো থেকে সরে যাচ্ছেন না? তাদের ভাষ্যমতে তারা তো নিজস্ব প্রাপ্তির জন্য রাজনীতি করেন না। তাহলে তারা কেন শীর্ষ পদের লোভ; নিয়ন্ত্রণের লোভ; পাওয়ার-প্র্যাকটিসের লোভ ছাড়তে পারছেন না। শীর্ষ জামাত নেতারা সবাই যদি তাদের নিজেদের অতীত কৃতকর্মের ব্যাপারে অনুতপ্ত হতেন, যদি তারা নিজেদের দাবী অনুযায়ী প্রকৃত মুসলমান হতেন তাহলে ক্ষমা চাইতেই বা ইতস্তত করবেন কেন? তাদের তো আরও আগেই উচিত ছিল বর্তমানে যে বিষয়টাকে তাদের 'রাজনৈতিক ভুল' বলে স্বীকার করছেন সে বিষয়টা নিষ্পত্তি করে ফেলা। এতদিন পরে এসে তারা বুঝলেন 'রাজনৈতিক ভুল', তাহলে ক্ষমা চাইতে কি আরও চলিস্নশ বছর অপেক্ষা করতে হবে?

দিনে দিনে অনেক জল গড়িয়ে, অনেক চড়াই উৎড়াই পেরিয়ে আজ অবস্থাটা এমন দাঁড়িয়েছে যে, একদিকে বর্তমান সরকারেরও বিরোধী দলকে কাবু করার স্বৈরাচারী মনোভাব আছে। অপরদিকে তাদের নির্বাচনী মেনিফেস্টোতেও যুদ্ধাপরাধের বিচার করার কথা বলেছে তারা। জামায়াতের যে অবস্থান তাতে তারা হয়ত অন্যকোন ইস্যুতে আন্দোলনে জনগণের সমর্থন পাবে। কিন্তু যুদ্ধাপরাধ ইস্যুতে জনগণের সমর্থন পাবে কি?

বর্তমান সরকারের নির্বাচনী মেনিফেস্টোতে আরও ছিল ঘরে ঘরে চাকুরির ব্যবস্থা করা, চাল-ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমানো। চাল-ডালের মূল্য কমানো তো দূরে থাক তারা এখন চালের মূল্য দ্বিগুণ করে ছেড়েছেন। আর চাকুরির কথা বললে- সরকারী দলের ক্যাডার বাহিনীকে নানাভাবে ওপেন কন্ট্রাক্টে সরকারী কাজ দেয়াসহ চাঁদাবাজি ও অন্যান্য অন্যায় রোজগারের সুযোগ করে দেয়া ছাড়া ঘরে ঘরে চাকুরি দেয়ার কোন আলামতও মেলে না।

যাহোক, শেষ কথা হল জামায়াতের শীর্ষ নেতারা ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগ করলেই নতুন প্রজন্মের জামায়াত সাধারণ্যে গ্রহণযোগ্যতা পাবে, নচেৎ তাদের আলখাল্লার ভেতরে জমাট দেশের গণহত্যা, লুণ্ঠন, ধর্ষণে সমর্থন-সহযোগিতার অপরাধে অপরাধী অন্তর সচেতন মানুষকে কাছে টানতে পারবে না। শুধু তাই নয় যেসব মুক্তিযোদ্ধা অন্যায়ভাবে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তাদেরও বিচার হবে। অন্যায় সবসময়ই অন্যায়। সময়ের কাছে সকলেরই জবাবদিহিতা করতে হবে।

1 comment:

  1. I hope all political leader shod be follow according this post.

    ReplyDelete