এক গঞ্জের গল্প
লিখেছেন - হুমায়ুন কবির
আমাদের গঞ্জের ছিদাম পাইকের কথা বলি
তাসের আড্ডা, সস্তা চা খানা, তামাকের
কালচে-নীল ধোঁয়ার মাঝে পরাণ কামারের
আটচালায় নানা স্মৃতি নিয়ে সে
ব্যস্ত থাকে সর্বদাই।
- ওহে জগবন্ধু, কত দিয়ে কিনলে ইলিশ?
ধান কী দর, কালু, ছেলেটাকে পড়িও ব্যাপারী
আমরা জোয়ান কালে, হুঁ হুঁ বাবা -
এই সব বলতে ছিদাম শিবনেত্র হয়ে যেত,
সেই কাল সামনে এসে হাত-পা নাচাত প্রত্যহ।
সেবার কী যেন হোল ঢাকায় সদরেও
পুলিশ কী নিয়ে যেন গুলি ও লাঠিতে
বহু ছেলে মেরে ফেলে। গঞ্জেও
এসেছে হরতাল, নিতাই, গফুর, সাধু,
জলিল, পঞ্চা বসে ছক কাটে কী কী
করা যাবে। বৃদ্ধ কেউ পাশে
বলে - বাবা সব, ঝাণ্ডায় মোদের কথা
লিখে দিও, অজন্মার খাজনা মকুব চাই
ওসির জুলুম বড়, চৌকিদারি ট্যাকসোও দেব না।
ছিদাম জাবর কাটে কি আর মিছিল হবে
হুঁ হুঁ বাবা গান্ধী মহারাজ মিস্টার জিন্নাহর কালে
হইছে মিছিল আর তোরা হুঁ হুঁ ... বাবা।
গঞ্জেও চলেছে গুলি, দু'জন মরেছে
জখম অনেক জন। আশপাশ গাঁয়ের কিষাণ
স্কুলের সকল ছেলে সাঁকো ভেঙ্গে পুলিশের দঙ্গল
কাসুন্দ্যার চরে ধরে চারিদিক থেকে
ন্যাজা ও বাঁশের লাঠি, বল্লম, গুলতি
দশ হাজার লোক হবে ঘিরে আসে খাকীর দঙ্গল
আবার চলল গুলি, কতজন মরছে কে জানে।
কিষাণেরা ঘিরে ধরে অবশেষে মারছে পুলিশ
বারান্দাঅলা টুপি পরা অফিসার হাত জোর করে
মাফ চায়।
এদিকে ছিদাম পাইক গান্ধী-জিন্নাহর কাল ভুলে
পিট পিট করে চায় আরে এ ত জব্বর লড়াই
হুঁ হুঁ বাবা কিষাণের ব্যাটা তেজালো হাতে
হাতিয়ার দিয়ে জঙ্গ করে। হুঁ হুঁ বাবা দেখালি লড়াই...।
Saturday, February 20, 2010
পুরনো ছড়া
সবার আমি ছাত্র
লিখেছেন - সুনির্মল বসু
আকাশ আমায় শিক্ষা দিল
উদার হতে ভাই রে,
কর্মী হবার মন্ত্র আমি
বায়ুর কাছে পাই রে ।
পাহাড় শিখায় তাহার সমান -
হই যেন ভাই মৌণ-মহান,
খোলা মাঠের উপদেশে -
দিল খোলা হই তাইরে ।
সূর্য আমায় মন্ত্রণা দেয়
আপন তেজে জ্বলতে,
চাঁদ শিখাল হাসতে মোরে,
মধুর কথা বলতে ।
ইঙ্গিতে তার শিখায় সাগর -
অন্তর হোক রত্ন আকর;
নদীর কাছে শিক্ষা পেলাম
আপন বেগে চলতে ।
মাটির কাছে সহিষ্ণুতা
পেলাম আমি শিক্ষা,
আপন কাজে কঠোর হতে
পাষাণ দিল দীক্ষা ।
ঝরণা তাহার সহজ গানে,
গান জাগালো আমার প্রাণে;
শ্যাম বনানী সরসতা
আমায় দিল ভিক্ষা ।
বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর,
সবার আমি ছাত্র,
নানান ভাবে নতুন জিনিস
শিখছি দিবারাত্র ।
এই পৃথিবীর বিরাট খাতায়,
পাঠ্য যে সব পতায় পাতায়
শিখছি সেসব কৌতূহলে,
নেই দ্বিধা লেশমাত্র ।
লিখেছেন - সুনির্মল বসু
আকাশ আমায় শিক্ষা দিল
উদার হতে ভাই রে,
কর্মী হবার মন্ত্র আমি
বায়ুর কাছে পাই রে ।
পাহাড় শিখায় তাহার সমান -
হই যেন ভাই মৌণ-মহান,
খোলা মাঠের উপদেশে -
দিল খোলা হই তাইরে ।
সূর্য আমায় মন্ত্রণা দেয়
আপন তেজে জ্বলতে,
চাঁদ শিখাল হাসতে মোরে,
মধুর কথা বলতে ।
ইঙ্গিতে তার শিখায় সাগর -
অন্তর হোক রত্ন আকর;
নদীর কাছে শিক্ষা পেলাম
আপন বেগে চলতে ।
মাটির কাছে সহিষ্ণুতা
পেলাম আমি শিক্ষা,
আপন কাজে কঠোর হতে
পাষাণ দিল দীক্ষা ।
ঝরণা তাহার সহজ গানে,
গান জাগালো আমার প্রাণে;
শ্যাম বনানী সরসতা
আমায় দিল ভিক্ষা ।
বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর,
সবার আমি ছাত্র,
নানান ভাবে নতুন জিনিস
শিখছি দিবারাত্র ।
এই পৃথিবীর বিরাট খাতায়,
পাঠ্য যে সব পতায় পাতায়
শিখছি সেসব কৌতূহলে,
নেই দ্বিধা লেশমাত্র ।
Subscribe to:
Posts (Atom)